ad
ad

Breaking News

Girl Worship

নিজের মেয়েকেই লক্ষ্মী রূপে পুজো! শিক্ষকের অভিনব উদ্যোগ

এই অভিনব উপায়ে একদিকে যেমন প্রতিবাদ লক্ষ করা যায়, অন্যদিকে একটি নারী যে দেবীর রূপ তাও বোঝানো হয়।

Girl Worship: Bengal Family Worships 6-Year-Old Daughter

গ্রাফিক্স: নিজস্ব

মাধব দেবনাথ, নদিয়া: চারিদিকে শিশু ও নারীদের নিয়ে যেসব ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে তা নিয়ে চিন্তিত থাকে পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়গুলিকে দেখে  সমাজে এক অন্যরকম বার্তা প্রেরণ করতে এক অভাবনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন দম্পতি (Girl Worship)। সোমবার লক্ষ্মী পুজোর দিন নিজেদের ছয় বছরের কন্যাকে লক্ষী রূপে পুজো করে। এই অভিনব উপায়ে একদিকে যেমন প্রতিবাদ লক্ষ করা যায়, অন্যদিকে একটি নারী যে দেবীর রূপ তাও বোঝানো হয়। নদিয়ার ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষ্ণগঞ্জ থানার মাজদিয়ার নাঘাটায় ভাজনঘাট হাই স্কুলের শিক্ষক অর্জুন বাগচী এই উদ্যোগ নেন।

আরও পড়ুনঃ নেই গৃহস্থ পুজো! পুরো গ্রাম মেতে ওঠে লক্ষ্মী-নারায়ণ আরাধনায়, কোথায় জানেন?

কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার পুণ্য তিথিতে সারা বিশ্ব যখন ধন-সম্পদ লাভের আশায় লক্ষ্মী মাতার আরাধনায় ব্রতী হয়, ঠিক সেই মুহূর্তে নিজের এক রত্তি কন্যাকে লক্ষ্মী মাতার আদলে সজ্জিত করেন দম্পতি। ধর্মীয় রীতি মেনে পুরোহিত ডেকে পুজো করা হয়। পৃথিবীতে এমন অসামাজিক ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার জন্য মা লক্ষ্মীর কাছে প্রার্থনা জানালেন বাগচী পরিবার। ছয় বছরের অরিত্রিকাকে লক্ষ্মীর আদলে সজ্জিত করে পুরোহিত ডেকে শিশু কন্যাকে মাতৃরূপে পুজো করেন পরিবারের সদস্যরা। (Girl Worship)

চিত্র: নিজস্ব

লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/Banglajagotvofficial

এই প্রসঙ্গে কন্যা শিশুর মা ঝুমা বাগচী বলেন, মেয়ে সন্তানকে প্রতিটি পরিবারেই লক্ষ্মী হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও নারীকে মাতৃ শক্তির আধার রূপে মানা হয়। মূলত সেই কারণেই মা লক্ষ্মীর মৃন্ময়ী মূর্তির বদলে ঘরের মেয়েকেই তাঁরা লক্ষ্মী মাতার রূপে আরাধনা করার সিদ্ধান্ত নেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক অরুণ বাগচী বলেন, নিজেদের মেয়েকে ভগবান রুপে আরাধনা করার মধ্যে দিয়ে সমাজ থেকে  নারীদের প্রতি অমানবিক ঘটনা চিরতরের জন্য বন্ধ করার আহ্বান জানান তাঁরা। মেয়ের জন্মের পর থেকে পরিবারের অনেক উন্নতি হয়েছে। (Girl Worship)

পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত কিছু সংখ্যক মানুষজনদের মধ্যে বাস্তব জীবনে মেয়েদের পিছন সারিতে ফেলে রাখার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কন্যা সন্তানদের প্রতি তাদের এই ভ্রান্ত ধারণা ও অসামাজিক মনোভাবকে মুছে দিতেই নিজের এক রত্তি কন্যা সন্তানকে মাতৃরূপে আরাধনা করার মধ্যে দিয়ে নারীদের প্রতি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, শিশু কন্যা সমাজে অবহেলিত নয়। ছেলে মেয়ে সন্তানের মধ্যে কোন বিভেদ করা ঠিক নয়। 

এলাকার বিশিষ্ট পুরোহিত বাবন ভট্টাচার্য বলেন, মেয়েরা মায়ের সমান। মেয়েকে লক্ষ্মী রূপে পুজো করাটা বিধিসম্মত। পুরোহিতের দৃঢ় বিশ্বাস, মেয়েকে যদি লক্ষীরূপে রাখা যায় পরের ঘরে গিয়েও সে সংসারকে আলোকিত করবে। দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে কুমারী পুজোর প্রচলন থাকলেও কোন শিশু কন্যাকে লক্ষ্মী রূপে আরাধনা করার ঘটনা এখনও পর্যন্ত নজিরবিহীন। অরিত্রার ঠাকুরমা পারুল বাগচী বলেন, “আমাদের অরিত্রা সত্যি লক্ষী। তার মত লক্ষী মেয়েকে লক্ষ্মী রূপে পুজো করতে পেরে আমরা পেরে গর্বিত”। শিক্ষক দম্পতির বাড়িতে একরতি লক্ষ্মীর পুজো ও কর্মকাণ্ডকে স্বচক্ষে দেখতে বাগচী পরিবারে ভিড় জমান আশেপাশের প্রতিবেশীরা। সবাই এহেন কাজকে কুর্নিশ জানান। (Girl Worship)