চিত্র: সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: রাজাময় মুখোপাধ্যায়: হাইলাইটস
বুধবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সূচনা হবে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের। তার আগে মঙ্গলবার বিকেলে চা চক্র আয়োজিত হল বিভিন্ন দেশের অ্যাম্বাসাডরদের ও শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে। অনেকগুলি দেশের অ্যাম্বাসাডরদের উপস্থিত ছিলেন এই চা-চক্রে। ছিলেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, হর্ষ নেওটিয়ার মতো রাজ্যের বিখ্যাত শিল্পপতিরা। সেই চা-চক্র অনুষ্ঠানের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রায় ৪০টি দেশ আসছে।
তারমধ্যে ২০টি পার্টনার কান্ট্রি। ৪০টি দেশের ২০০ ডেলিগেটস উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে। এটা ইউনিক একটা অনুষ্ঠান।’ কে কে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে? এই প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভুটানের প্রধানমন্ত্রী অক্টোবর মাসে কনফার্ম করেছিলেন। মুকেশ আম্বানি, সজ্জন জিন্দালের মতো শিল্পপতিরা আসবেন। আমাদের এখানকার সমস্ত ক্যাপ্টেন অব দ্য ইন্ডাস্ট্রি সকলেই আসবেন। সকলেই আসবেন যারা প্রতিবছর থাকেন। তা ছাড়াও আরও অনেকে আসেন।’ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে (বিজিবিএস) এ বার অন্যতম প্রধান অতিথি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
ইতিমধ্যে তিনি ভারতে এসেছেন। মঙ্গলবার তিনি মহাকুম্ভে স্নান করেন। তাঁর আসা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা জানা নেই, তাই এখন কিছু বলতে পারছি না।
যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁর না আসার বার্তা আসছে, ততক্ষণ কিছু বলতে পারছি না। উনি আমাকে কনফার্ম করেছিলেন। আমি এখনও পর্যন্ত জানি বুধবার সকালে আসবেন। আমি চাই উনি আসুন।’ ভুটানের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভুটানের সঙ্গে বাংলার বর্ডার আছে। আমরা আমাদের সম্পর্ক উন্নত করতে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে, যে দেশগুলি দেশের জন্য সাহায্যকারী।’
বাংলায় বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে দেশের তো বটেই বিদেশের বড় বড় শিল্পপতিদের আছে আহ্বান জানায় রাজ্য। বিনিয়োগের সুযোগ নিতে নামীদামি শিল্প সংস্থার কর্তারা আসছেন কলকাতায়। বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে গোটা মহানগরী সাজানো হয়েছে বড় বড় হোর্ডিং ও ব্যানারে। ‘বেঙ্গল মিনস বিজনেস’-মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই মূল থিমকে সামনে রেখেই বসছে বাণিজ্যের মহামেলা। ক্ষুদ্র শিল্প থেকে তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়া থেকে টেক্সটাইল, কৃষিভিত্তিক পণ্য থেকে কুটির শিল্প, পর্যটন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে।
মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে এর আগেও বাণিজ্য সম্মেলনে এসেছেন দেশের এক নম্বর শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি। এবারও তিনি আসছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে, বাংলায় রিলায়েন্সের বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চলেছেন মুকেশ আম্বানি। এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিতে চলেছে ৪০টি দেশ। এই শিল্প সম্মেলন থেকেই রাজ্যে সেমিকন্ডাক্টর, বস্ত্র ও চর্মশিল্প, পর্যটন, ভারী শিল্প-সহ একাধিক ক্ষেত্রে লগ্নি টানায় এবার বিশেষ জোর দিয়েছে রাজ্য। শিল্পের অনুকূল জমিও রয়েছে ল্যান্ড ব্যাঙ্কে।
মঙ্গলবার বিকেলের চা চক্র দিয়ে বোধন হয়ে যায় শিল্প-উৎসবের। শিল্প জগতের রথী-মহারথীদের নিয়ে বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে দু’দিনের ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’। এই শিল্প সম্মেলন থেকে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা যেমন উঠে আসবে, তেমনই প্রচুর কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য সরকার।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিল্প মানচিত্র বদলে উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে বিনিয়োগ এনে কর্মসংস্থানের দিশা খুলে দেওয়ার জন্য বিদেশ সফরও করেছেন তিনি। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা মুখ্যমন্ত্রী একই উদ্যোমে বিনিয়োগ টানার চেষ্টা করে চলেছেন। চলতি বছরের বিজিবিএস নিয়ে কয়েক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দেয় রাজ্য।
সব মিলিয়ে ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ হয়ে উঠুক ‘বঙ্গে বসতে লক্ষ্মী’ এই ভাবনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’ আজ দেশ-বিদেশের শিল্প মহলে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। রাজ্যের জন্য, রাজ্যের মানুষের জন্য শিল্প মহলের কাছে থেকে বিনিয়োগ আনার মহাযজ্ঞের আজ সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বাণিজ্য বৈঠক আরও বড় আকারে হতে চলেছে।