Bangla Jago desk: দাশমুন্সি বাড়ির উঠোনে এখন আর উমা আসে না। হয় না ধনুচি নাচ,বাজে না ঢাক। পুজোর উল্লাস উধাও হয়ে গেছে। পুজোর সময় মনে পড়ে অতীতের কথা। উৎসবের দিনগুলোতে যেন খাঁ খাঁ করে কালিয়াগঞ্জের প্রাসাদপম বাড়িটা। বাড়ির মালিক প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি প্রয়াত হওয়ার পর পুজোর আনন্দ মাটি হয়ে যায়।
কালিয়াগঞ্জে ঠাকুর দেখতে গেলে আগে সবাই ছুটে যেতেন দাশমুন্সি বাড়িতে। পারিবারিক ঐতিহ্য,পুজোর রীতি থেকে ধুমধাম সবেতেই প্রিয়দার পরিবারের আলাদা সুখ্যাতি ছিল। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি থেকে উঠে যাওয়া প্রিয়রঞ্জন বরাবরই দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে থেকেছেন। রায়গঞ্জ কলেজ থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়,সব জায়গাতেই প্রিয়রঞ্জনের মেধা-মুন্সিয়ানা তাক লাগায়। তথ্য –সম্প্রচার সহ ৪টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলে প্রিয়রঞ্জন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
দিল্লিতে থাকলেও মাটির প্রতি টান ছিল বঙ্গ রাজনীতির এই কুশলী নেতার। তাই পুজোর সময় ধনুচি নাচ থেকে পুজোর আচার পালন বা আয়োজনের রাশ নিজের হাতেই রাখতেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হবার পর সেই পূজার জৌলুস আরও অনেকগুন বেড়ে যায়। ষষ্ঠীর দিন কালিয়াগঞ্জে পৌছাতেন প্রিয়রঞ্জন। ষষ্ঠী থেকে দশমী কালিয়াগঞ্জের বাড়ির পুজোয় মেতে উঠতেন তিনি। ১৯৪৫ থেকে শুরু হওয়া প্রিয়রঞ্জনের জার্নি শেষ হয় ২০১৭তে। তারপর অরুণ দে সরকার এই বাড়ির পুজো করতেন। তিনিও চলে যাওয়ায় এই বাড়ির পুজোর আলো নিভে যায়।
দাশমুন্সী বাড়ির ভিটেতে এখন মা দুর্গার পা পড়ে না।এ বাড়ির উঠোনে আর ঢাকের বোল ফোটে না। ধনুচী নাচ,সিঁদুর খেলা সবাই আনন্দের আঙিনা থেকে উধাও হয়ে গেছে। প্রাণের পুজোটাই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কালীয়াগঞ্জবাসীর বড় মন খারাপ। কারণ বাড়ির পুজো হলেও এই চিরাচরিত পুজোয় আসতো এলাকাবাসী।জমিয়ে আড্ডা, ভোগ খাওয়া থেকে সবই হত আলাদা আড়ম্বরের সঙ্গে। এখন আর ৫টা পুজো হলেও এই দাশমুন্সীদের পুজোর মণ্ডপ ফাঁকাই থাকে। এখানকার প্রবীণ মানুষদের পুরনো স্মৃতি মনে পড়লে মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়, বিষাদে ঢেকে যায় তাঁদের উৎসবের দিনগুলো।