ad
ad

Breaking News

Malda kalipuja

কন্যা রূপে শাঁখা পরতে আসেন মা,আলৌকিক কাহিনী রয়েছে গৌড়বঙ্গে

মালদার হবিবপুরের মানিকোড়ায় কালী পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। জাগ্রত কালী আরাধনার পিছনে রয়েছে অলৌকিক কাহিনী। কথিত আছে, একসময় ডাকাতরা এই পুজো শুরু করেন।

Kalima of Manikora is located in Jazail area of ​​Habibpur, about 50 km from Malda city

Bangla Jago Desk: মালদার হবিবপুরের মানিকোড়ায় কালী পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। জাগ্রত কালী আরাধনার পিছনে রয়েছে অলৌকিক কাহিনী। কথিত আছে, একসময় ডাকাতরা এই পুজো শুরু করেন। সেই পুজোয় মা স্বয়ং কন্যা রূপে দেখা দেন। শাঁখারির কাছে শাঁখা পরে চলে যান। সেই থেকে মায়ের উপস্থিতি অনুভব করতে পারেন ভক্তরা।

মালদা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলো মিটার দূরে রয়েছে হবিবপুরের জাজৈল অঞ্চলে মানিকোড়ার কালীমা।  সেই কালি কে গৌড়বঙ্গের মানুষ জাগ্রত কালী বলে জানে। জনশ্রুতি রয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে ডাকাতরা এই কালী পুজো শুরু করেন। কালি পুজো ঘিরে এক রহস্যময় কাহিনিও রয়েছে। সে সময় একদল ডাকাত জঙ্গলে ভরা এই মানিকোড়ায় পূর্নভবা নদী পেরিয়ে এসে মায়ের পুজো করতো। সূর্যোদয়ের আগেই এলাকা ছেড়ে আবার চলে যেত জঙ্গলে। আরও অনেক গল্প জড়িয়ে রয়েছে মানিকোড়ার এই মা কালিকে নিয়ে। কথিত আছে যে যেহেতু ডাকাতেরা পুজো করতো, সেইজন্য নিঃশব্দে এই পুজো হতো।

[আরও পড়ুনঃ Bangladesh: গণহত্যার দায়ে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে হাসিনাসহ তাঁর সঙ্গীদের! রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানাল ইউনুস সরকার

মা কালি নাকি কোনোরকম আওয়াজ শুনতে পছন্দও করতো না। পুজোর পরে বলি দিত ডাকাতেরা। বিশ্বাস করা হত, সে সময় মা নড়ে উঠতো। মাকে পায়ে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো আজও পাঁঠা বলির সময় সেই রীতি মেনে মায়ের পায়ে শিকল দেওয়া না হলেও মা যাতে বলি না দেখতে পায় সেই জন্য কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ধীরে ধীরে জনবসতি বাড়তে থাকায় ডাকাতেরা পুজো থেকে সরতে থাকে। ঠিক সেইসময় পুরো পুজোর দায়িত্ব নিয়ে নেয় এলাকার জমিদার ভৌরবেন্দ্র নারায়ন রায়। শেষ পর্যন্ত জমিদারি চলে যেতে থাকায় গত ১০০ বছর আগে পুজোর দায়িত্ব জমিদাররা তুলে দেন গ্রামবাসীদের হাতেই। আজও ধুমধামের সাথে এই কালি পুজো করে আসছে মানিকোড়া গ্রামবাসীরা।

এই কালি পুজোকে ঘিরে হবিবপুর সহ মালদায় বেশ সাড়া পড়ে। কালি পুজোতে ভক্তদের ঢল নামে। সাতদিন ধরে চলে এখানে কালি পুজোর মেলা। এই কালিকে ঘিরে যে আরও বেশ কিছু কাহিনি আছে সেটাও জানিয়েছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। কথিত আছে, গ্রামে এক শাঁখারি আসে শাঁখা বিক্রি করতেন। সে সময় এক মহিলা এসে তাঁর কাছে শাঁখা পড়তে চান। শাঁখা পড়ার পর শাঁখারি টাকা চাইলে ওই মহিলা বলে, ‘টাকা দেবে তার বাবা’। শাঁখারি তার বাবা কে জানতে চাইলে ওই মহিলা সেবাইত কালিবাবার নাম উল্লেখ করেন। এরপর সেখানে কালিবাবা উপস্থিত হলে শাখারি তাঁর কাছে টাকা চান। কালিবাবা বলেন, তাঁর কোনো মেয়ে নেই। ঠিক সেই সময়ই দেখতে পান পুকুরে শাঁখা পড়া দুই হাত উঠে আছে। তখনই তিনি বুঝতে পারেন যে, স্বয়ং মা কালি তাঁর মেয়ে সেজে এসে শাঁখা পড়ে গেছে। তাঁর পরই শাঁখারিকে শাঁখার দাম দিয়ে দেয় ওই সেবাইত।

[আরও পড়ুনঃ Divorce Case: শরীয়ত কাউন্সিল আদালত নয়, বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিতে পারেনা: হাইকোর্ট

এছাড়া শোনা যায়, এই গ্রামে বেশ কিছু পরিবার এসে বসবাস শুরু করে। তাঁরা চিড়ে তৈরী করে বিক্রি করত। মা কালি রাতে আওয়াজ করা পছন্দ করে না। কিন্তু ওই গ্রামবাসীরা চিড়ে বানাতো রাতে। এবং তার জন্য আওয়াজ হত। কথিত আছে মা বেশ কয়েকবার স্বপ্নও দেন ওই চিড়ে বিক্রেতাদের। কিন্তু তবুও তারা না শোনায় গ্রামে কলেরা রোগ দেখা দেয়। বেশ কিছু লোক মারাও যায়। এরপর তারা রাতে চিড়ে তৈরী করা বন্ধ করে দেয়। তারপর আর কোন রোগও দেখা দেয় নি। ভক্তদের সমস্ত আর্জি মা মিটিয়ে দেন বলেই দাবি এলাকাবাসিদের। আজও নিষ্ঠার সাথে মানিকোড়া মায়ের পুজোর হয়ে আসছে ধুমধামের সাথে। আর মায়ের পুজোকে কেন্দ্র ইতি মধ্যে মেলা সরমজাম নিয়ে বসতে শুরু করেছে। এই মেলা সাতদিন ধরে মেলাও জমে উঠে। সবার কাছেই, মানিকোড়া কালি আজও জাগ্রত কালি।