ad
ad

Breaking News

Joydeb Kenduli Mela

মহামানবের সাগরতীর কেন্দুলি, বাউল-ফকিরের মিলনমেলা

জয়দেবের স্মৃতিধন্য কেন্দুলি লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর সমাগমে মুখর হয়ে উঠেছে।

The great man's seaside retreat, a gathering of Bauls and Fakirs

চিত্র: সংগৃহীত

Bangla Jago Desk: জয়দেবের স্মৃতিধন্য কেন্দুলি লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর সমাগমে মুখর হয়ে উঠেছে। মকর সংক্রান্তিতে কেন্দুলি মেলায় আসা লক্ষ লক্ষ ভক্ত রাধাবিনোদের মন্দিরে পুজো দেন। প্রার্থনা করেন পরমপুরুষের কাছে। বাউল-ফকিরের সুরে সরগরম এই বীরভূমের  মিলনমেলা কার্যত জাতি-ধর্ম নিবির্শেষে মানুষের কাছে লোক-ঐতিহ্যের অঙ্গ হয়ে উঠেছে।

অজয়ের তীর এখন হয়ে উঠেছে, মহামানবের সাগরতীর।মকর সংক্রান্তিতে হাজার হাজার মানুষ মিশে যান বীরভূমের এই মহামানবের জন্মভিটেতে। গীতগোবিন্দের রচিয়তা জয়দেব এই কেন্দুলিতেই জন্ম নেন। আনুমানিক, ১১৫৯ সালে পৌষ-সংক্রান্তির দিন কবি জয়দেব মা গঙ্গার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়।

ঐতিহাসিকদের মতে মা গঙ্গাকে স্মরণ করে অজয় নদে মকরস্নান উপলক্ষে এই মেলার সূচনা হয়েছিল। পরে তার সঙ্গে জয়দেবীয় ঐতিহ্য যুক্ত হয়ে তা হয়েছে জয়দেবের মেলা। জয়দেব রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি ছিলেন। তাই ঐতিহ্য মেনে এখনও জয়দেবের এই পবিত্র মাটিতে আসের মাটির সুরের সাধক বাউল থেকে ফকির,নানা সম্প্রদায়ের মানুষ। কার্যত সবার ভক্তিসাগরে আবেগে ভেসে যায় এই বীরভূমের নদীতীর। অন্যান্য বছরের মতো এবারও ৪লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে।ভক্তরা পুণ্যস্নানের পর রাধাবিনোদের মন্দিরে পুজো দেন। 

সোমবার সকাল থেকেই পুণ্যার্থীদের ভিড় জমতে শুরু করে। বিকেলে সেই ভিড় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রস্তুত জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মন্দির ও মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরা। এমনকী, ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালায় প্রশাসন। কেন্দুলি মেলার উদ্বোধন করেন অনুব্রত মণ্ডল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর মেলা প্রাঙ্গণে ২০০টি সিসি ক্যামেরা ও ১৬টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। ভক্ত ও পুণ্যার্থী, পর্যটকদের সহায়তায় মেলার বিভিন্ন প্রান্তে ৩৩টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ বসানো হয়েছে।

স্নানের ঘাটে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য তিনটি ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম রাখা হয়েছে। যানজটে যাতে মেলা অবরুদ্ধ না হয় সেদিকেও সতর্ক প্রশাসন। মেলার বাইরে আটটি পার্কিং ও ২৩টি ড্রপগেট বসিয়েছে ব্লক প্রশাসন। এছাড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে পাঁচটি ফায়ার ফাইটিং টিম রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ১৬৩৪ জন সিভিক ভলান্টিয়ার, ৭৩৬ জন পুলিশকর্মী, ১৭টি অ্যান্টি ক্রাইম টিম ঘুরবে মেলা প্রাঙ্গণে। মহিলাদের নিরাপত্তায় দু’টি উইনার্স টিম থাকছে মেলায়।

গ্রামীণ এই মেলায় মূলত বাউল-ফকিররা সমবেত হন। তাই তাঁদের থাকার জন্য স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে মোট ২৫১টি আখড়া করা হয়েছে প্রশাসনের উদ্যোগে। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণ নির্মল রাখতে পর্যাপ্ত স্থায়ী ও অস্থায়ী শৌচাগার তৈরি করেছে ব্লক প্রশাসন। মেলায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্যও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসন মিলনমেলাকে সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ায় খুশি ভক্তরা।