Bangla Jago Desk: এখানে চণ্ডীপাঠ আর মসজিদের আজান মিলেমিশে একাকার।উপাসনা পদ্ধতি ভিন্ন হলেও আসলে যে ইশ্বর-আল্লার তফাত নেই,তা মর্মে মর্মে বুঝেছেন উঃদিনাজপুরের মেহেন্দি গ্রামের মানুষ।তাই হিংসা বা অসহিষ্ণুতার এই বিশ্বে এই গ্রামের মানুষ গড়ে তুলেছেন সামাজিক সম্পর্কের এক নিখুঁত বুনন।বাংলার এই গ্রাম যেন লালনের ভাষায় বলে ওঠে, এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে, যেদিন হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান জাতি গোত্র নাহি রবে-।পুজোর ইতিহাস বলছে,প্রায় সাড়ে ৪০০বছর আগে অবিভক্ত দিনাজপুরের হরিপুরের জমিদাররা প্রত্যন্ত গ্রামে প্রজাদের আনন্দের জন্য পুজোর আয়োজন করে।
জমিদার বাড়ির লোকেরাই পুজোর আয়োজক ছিল।দেশভাগের পর মেহেন্দি গ্রাম ভারতীয় ভূখণ্ড অর্ন্তভূক্ত হয়।ফলে পুজোর রাশ আর জমিদারদের হাতে থাকেনি। পুজোর ভার চলে যায় মেহেন্দিগ্রামের বাসিন্দাদের হাতে। যদিও সেসময় হরিপুরের জমিদার বাড়ি থেকেই আসত পুজোর সামগ্রী। এখন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ আরাধনার পবিত্রতা বজায় রেখে পুজোপাঠ করেন।এই উত্সবের সামাজিক বন্ধন দেখে গর্বের সুরে গ্রামবাসীরা বলছেন,এমন গ্রামটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।আবাদ করে বিবাদ করে সুবাদ করে তাঁরা।
মৃন্ময়ী দুর্গার মমতাময়ী বাঁধনের কথা তুলে ধরছেন উত্সব উদ্যোক্তারা।দুই সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্যোগেই হয়ে আসছে পূজো। উভয় ধর্মাবলম্বী মানুষই মিলিতভাবে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেয়।বিসর্জনেও সবাই মিলে অংশ নেয়।হাতে হাত ধরে উত্সব পালনের এই রীতি গ্রামবাসীদের সহবস্থানের ভিতকে মজবুত করেছে বলেও পুজো উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন। উদারতার আলো জ্বালিয়ে সমমনস্ক ভাবনায় উত্সবের এই মালা গাঁথা,দেখে দর্শনার্থীরাও খুশি হয়।
Free access