নিজস্ব চিত্র
Bangla Jago Desk: ঈশ্বর গুপ্তের জন্মদিনে কাঁচরাপাড়ায় এক সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সাহিত্য সম্মেলনে থেকে অবহেলিত ঈশ্বর গুপ্তের নামে তাঁর জন্মস্থানে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলার দাবি উঠল। ঈশ্বর গুপ্তের সম্পাদিত সংবাদ প্রভাকরের সংখ্যা গুলির পাশাপাশি তাঁকে নিয়ে যেসব পুস্তকাদি বেরিয়েছে সেগুলিও এই সংগ্রহশালায় রাখা হোক। এই দাবি তুললেন ‘কাঁচরাপাড়া সাহিত্য সম্মেলন’-এর আহবায়ক ক্ষেত্র গবেষক ও সাংবাদিক স্বপন কুমার দাস।
কলকাতা লোকসংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে এবং সান্ধ্য দৈনিক নির্ভীক কন্ঠের সহযোগিতায় এই সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে স্বপন কুমার দাস আরও বলেন, কাঁচরাপাড়া স্টেশন থেকে গান্ধী মোড় পর্যন্ত রাস্তার নামকরণ করা হোক ‘ ঈশ্বর গুপ্ত সরণি’। এই রাস্তার ট্রাফিক আইল্যান্ডের মুখে কবি ঈশ্বর গুপ্তের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হোক। ঈশ্বর গুপ্ত স্মৃতিসৌধ আজ বন্দি কেন্দ্রীয় সরকারের গবেষণাগার এর মধ্যে রয়েছে সেখানে পৌঁছতে হলে খাতায় এন্ট্রি করে যেতে হয়। সেখানে যাতায়াতের পথটি সুগম করা হোক ও পরিচ্ছন্ন রাখা হোক।
আরও পড়ুনঃ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শূন্যপদে নিয়োগ, কীভাবে করবেন আবেদন?
ভারতীয় ডাক বিভাগের কাছে তিনি আবেদন করেন ঈশ্বর গুপ্তের প্রতিকৃতি সহ একটি ডাক টিকিট প্রকাশিত হোক। অনুষ্ঠানের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার ও কবি তুষার কান্তি মুখোপাধ্যায় বলেন, ঈশ্বর গুপ্তের নামাঙ্কিত এই অনুষ্ঠানে আগত সকলে তাঁর কথা তাঁর লেখা কবিতা বা তাঁকে নিয়ে কবিতা বলা উচিত। তিনি এদিন ঈশ্বর গুপ্তকে নিয়ে একটি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। এদিন ইতিহাস গ্রন্থ লেখক অভিষেক অধিকারী ঈশ্বর গুপ্তকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কাজ আজ পর্যন্ত হয়নি তাকে নিয়ে সেই কাজে এগোক গবেষকরা ও সরকার । কবি ও গল্পকার হরিৎ সাবর্ণ ঈশ্বর গুপ্তের জীবনীর পাশাপাশি কাব্য রীতি তুলে ধরেন।
লেখক মৃণাল দত্ত বলেন কাঁচরাপাড়া শুধু নয় গোটা দেশের গর্ব ঈশ্বরগুপ্ত। তিনি হালিশহরের অপর এক গুণী সন্তান সাধক রামপ্রসাদের সঙ্গে ঈশ্বর গুপ্তের কথা তুলে ধরেন। কবি বিক্রমজিৎ ঘোষ কবিতার মধ্যে দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। কবি ও গবেষক শিব সৌম্য বিশ্বাস ঈশ্বর গুপ্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। তিনি প্রারম্ভিক বক্তব্যে সংক্ষেপে ঈশ্বর গুপ্ত সম্পর্কে সকলকে অবহিত করান। কবি ও সাংবাদিক এবং বাংলার প্রথম সংবাদপত্রের প্রকাশক গঙ্গা কিশোর ভট্টাচার্য স্মৃতি রক্ষা কমিটির সভাপতি দ্বারকা নাথ দাস বলেন, গঙ্গা কিশোর ভট্টাচার্য বাঙ্গালীদের মধ্যে প্রথম সংবাদপত্র প্রকাশ করেছিলেন সেই পত্রিকা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ঈশ্বর গুপ্ত দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করে পত্রপত্রিকা জগতকে সুদৃঢ় করেন। তিনি এদিন একটি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
আরও পড়ুনঃ দোলের রঙে কীভাবে ত্বক সুরক্ষিত রাখবেন? বিশেষ পরামর্শ দিলেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
এই দিনের অনুষ্ঠানে ক্ষেত্র গবেষক স্বপন কুমার দাসের ‘দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ঈশ্বর গুপ্ত’ নামে একটি গ্রন্থের প্রচ্ছদ প্রকাশিত হয়। এদিনের অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করে তুলেছিল ঈশানি বাচিক চর্চা কেন্দ্রের শিল্পীবৃন্দ। তারা ঈশ্বর গুপ্তের বেশ কয়েকটি কবিতা নিয়ে একটি সুন্দর কোলাজ ‘দুনিয়ার কাছে কিছু কিছু নয়’ পরিবেশন করে সকলকে মুগ্ধ করে। কোলাজে অংশগ্রহণকারীরা হলেন পাপড়ি দাস , তুতুন বোস, অনুশ্রী দাস, নীলিমা মুখোপাধ্যায়, কাকলি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মিঠু মজুমদার।
কোলাজটির ভাবনা ও পরিকল্পনা ছিল পাপড়ি দাসের। শিশু শিল্পী আলেখ্য নন্দী, দক্ষ সংগঠক শুভ্রাংশ মিত্র, সাংবাদিক শোভনলাল রাহা, সাংবাদিক রত্না সরকার, বাচিক শিল্পী সুপ্রিয়া ঘোষ, প্রদীপ দে, মৌলি মহান্তি, অশোক ঘোষ, তুফানগঞ্জ থেকে আগত উমাপদ রক্ষিত, শ্রীস পত্রিকার সম্পাদিকা ইলা দাস, কল্যাণী দেবনাথ, কল্যাণী মন্ডল, চিন্ময়ী চ্যাটার্জী, অরূপ দে তপাদার, লাবনী ব্যানার্জি, ধ্রুব হালদার, দেবকি দুলাল চক্রবর্তী, রিনা দে এবং মৃত্যুঞ্জয় দে, দেবাশীষ চিন্যা কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও বক্তব্য রাখেন। এদিন সাংবাদিকতার জন্য জেল খেটে বেরিয়েছেন রশ্মি বাংলা পত্রিকার প্রকাশক সুধাংশু শেখর সরকার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাহিত্য সংগঠক ও সাংবাদিক বিধান ঘোষ।