নিজস্ব ছবি
Bangla Jago Desk,শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর: ইচ্ছে করলেই বাড়িতে আড়ম্বরের সাথে, হইহুল্লোড় করে ছেলেমেয়ের জন্মদিন পালন করতে পারতেন। তবে, শিক্ষক হিসেবে সমাজের প্রতি একটা বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ছেলেমেয়েদেরও এখন থেকেই পরিবেশপ্রেম এবং মানবধর্ম পালনের বিষয়ে সচেতন করা উচিত বলেও মনে করেছিলেন। আর সেজন্যই জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক শান্তনু দে নিজের ছেলেমেয়ের জন্মদিন পালন করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য তৈরি একটি স্কুলকে।
আজ তাই গড়বেতার উপকন্ঠে মা সর্বমঙ্গলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে ছেলে অরণ্য এবং মেয়ে অঙ্কিতার জন্মদিন পালন করলেন তিনি। প্রায় ২০ জন দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার শিকার ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ছেলে অরণ্যের দশম এবং মেয়ে অঙ্কিতার ১৬ তম জন্মদিন পালন করেন শিক্ষক শান্তনু দে সহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কেকে কেটে, বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেমেয়েদের হাতে উপহার তুলে দিয়ে এবং তাদের দুপুরের খাবার খাইয়ে জন্মদিন পালন করেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বিশ্ব উষ্ণায়নের কথা মাথায় রেখে এবং সবুজায়নের বার্তা দিতে পুনর্বাসন কেন্দ্রের সুবিশাল ক্যাম্পাসের আশেপাশে চারাগাছ রোপনও করা হয়। এছাড়াও, ঠিক পাশেই অবস্থিত সিলভার জুবিলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও বৃক্ষজাতীয় ১০ টি চারাগাছ রোপন করা হয়। শুধু গাছ লাগানোই প্রতিটি গাছের দেখভাল করার দায়িত্বও নেন শান্তনু তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
শান্তনু বলেন, “গত ৭ জুলাই ছিল আমার ছেলে অরণ্যর ১০ ম জন্মদিন এবং মেয়ে অঙ্কিতার ১৬তম জন্মদিন। পরিবেশ ও সমাজের প্রতি ছোট থেকেই ওদের সচেতন করে তুলতে এবং মানুষ হয়ে মানুষের পাশে থাকার শিক্ষা দিতে জন্মদিন পালনের জন্য আমরা বেছে নিয়েছিলাম বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলটিকে। ওদের সঙ্গে একটু আনন্দ ভাগ করে নিতে বৃহষ্পতিবার দুপুরে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম স্কুলে। ভুল কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগিতায় জন্মদিন পালন এবং বৃক্ষরোপণের কাজ সম্পন্ন করলাম।” শান্তনু এও বলেন, “ছেলে অরণ্য-কে অরণ্যর গুরুত্ব বোঝাতেই ওর নিজের হাত দিয়ে সিলভার জুবলি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১০টি চারা গাছ রোপন করানোর উদ্যোগ নিই। আমাদের বাড়ি যেহেতু এই স্কুলের ঠিক পেছেনেই। এই গাছগুলির যত্ন ও দেখাশোনা করার দায়িত্বও ওকেই নিতে বলেছি। ওই দিন বিকেল থেকেই আমার মেয়ে আর ভাইঝিকে সঙ্গে নিয়ে গাছে জল দিতে চলে আসছে দেখে আনন্দও হচ্ছে।”