ad
ad

Breaking News

Alipurduar

৩৩ বছরে ‘গাদান বথর’, ঐতিহ্যে উজ্জ্বল সাতালি মেচ বডো জনজাতি

এই উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তরুণ প্রজন্মকে শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত রাখতে এই রীতিগুলিকে প্রতিনিয়ত চর্চা করে চলেছেন এই জনজাতির মানুষজন।

Gadan Bathar celebrates 33 years, Satali Mech Bodo tribe shines in tradition

চিত্র - নিজস্ব

Bangla Jago Desk: আলিপুরদুয়ার জেলার সাতালি মণ্ডলপাড়া গ্রামে নতুন বছরের আগমনে উৎসবের আনন্দে মেতেছে মেচ বডো জনজাতির মানুষজন। চিরাচরিত রীতি ও সংস্কৃতির আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ৩৩ তম বর্ষে পদার্পণ করল ‘গাদান বথর’ উৎসব।

১৯৯২ সাল থেকে চালু হওয়া এই উৎসব শুধুই একদিনের অনুষ্ঠান নয়, বরং এক সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক মিলনের প্রতীক। পয়লা বৈশাখে প্রকৃতি আর অগ্নির পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। মেচ বডো জনজাতির ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, প্রকৃতিই জীবনের উৎস এবং অগ্নিই তার প্রতিনিধি। তাই মূর্তি পূজা পরিহার করে তারা আগুনকে কেন্দ্র করেই তাদের নববর্ষের শুভ সূচনা করে।

মহিলারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘ডোখনা’ পরে পূজার্চনায় অংশগ্রহণ করেন। পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্থানীয় পুরোহিত বঙ্কিম ব্রহ্ম, যিনি জানান, “এই উৎসব আমাদের সংস্কৃতির অস্তিত্ব। আমরা প্রাকৃতিক শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি। এটাই আমাদের পথ।”

পূজার পর পরই শুরু হয় বর্ণময় ও প্রাণবন্ত ‘বাগুরুম্বা’ নৃত্য। এই নৃত্য শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং সমাজের একতা ও সৌহার্দ্যের প্রতীক। মহিলারা সাতদিন ধরে আশেপাশের বডো পরিবারগুলির বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এই নৃত্য পরিবেশন করেন। প্রতিটি পরিবারে নাচের পর পরিবেশিত হয় স্থানীয় খাবার ও প্রসাদ, যার মধ্যে খিচুড়ি অন্যতম।

এই উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তরুণ প্রজন্মকে শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত রাখতে এই রীতিগুলিকে প্রতিনিয়ত চর্চা করে চলেছেন এই জনজাতির মানুষজন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “এই উৎসব আমাদের আত্মপরিচয়। বাইরে থেকে বহু মানুষ এই সময় গ্রামে আসেন আমাদের সংস্কৃতি দেখার জন্য। এটা আমাদের গর্ব।”

‘গাদান বথর’ আজ শুধুই মেচ বডোদের উৎসব নয়, এটি হয়ে উঠেছে প্রকৃতি, ঐতিহ্য ও সামাজিক ঐক্যের এক অনন্য উদাহরণ।