গ্রাফিক্স: নিজস্ব
নয়ন কুইরি, ঝালদা: অপূর্ব! এ যেন প্রকৃতি ও ইতিহাসের একটুকরো মেলবন্ধন। কোথায় জানেন? তা জানতে হলে যেতে হবে পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সিলফোড় (Silphor Hill) পাহাড়ে। যা আজও বয়ে নিয়ে চলেছে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ভক্তির এক অমলিন ধারাবাহিকতা। এখানে প্রায় ১৩০টি সিঁড়ি বেয়ে উঠলে দেখা মেলে প্রাচীন মা কালী মন্দিরের। শহরের কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে এই পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে যেন অনুভব করা যায় এক অপূর্ব শান্তি ও আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া।

আরও পড়ুনঃ অজিদের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন পোস্ট কোহলির
মন্দিরের পূজারী দেবাশীষ চক্রবর্তী জানান, একসময় ঘন জঙ্গলে ঢাকা এই পাহাড় ছিল ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবীদের গোপন আশ্রয়স্থল। তাঁদের পদচারণায় ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে এই সিলফোড় পাহাড়। স্বাধীনতার পর স্থানীয় সমাজসেবী প্রেমচাঁদ মোদক মহাশয়ের উদ্যোগে পাহাড়ের চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় মা কালী মন্দির। এরপর তৎকালীন সাংসদ দেবেন্দ্রনাথ মাহাতোর উদ্যোগে ১৯৭৩ সালে শুরু হয় মন্দিরের সৌন্দর্যায়ন প্রক্রিয়া। বহু বছর পর, ২০১৭ সালে ঝালদা পৌরসভার সহায়তায় মন্দিরটি নতুন সাজে সজ্জিত হয়। (Silphor Hill)

লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/Banglajagotvofficial
স্থানীয় বাসিন্দা বলরাম মণ্ডল জানান, কালীপুজোর সময় পাহাড়চূড়ায় ভক্তদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে সমগ্র এলাকা। মন্দির কমিটির সদস্য অনুপ কুমার চোপড়া বলেন, পুজোর সময় হাজার হাজার ভক্ত উপস্থিত হন। ঝালদা পৌরসভা ও থানার পক্ষ থেকে নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আলোসজ্জার উদ্যোগ। (Silphor Hill)

প্রতি বছর দীপাবলির সময় এই মন্দিরে আয়োজন করা হয় বিশেষ পুজো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। স্থানীয় মানুষদের কাছে এই স্থান শুধু ভক্তির কেন্দ্র নয়, এটি ঝালদার ঐতিহ্যের প্রতীকও বটে। পাহাড়ের চূড়া থেকে পুরো ঝালদা শহরকে এক নজরে দেখা যায় সূর্যাস্তের সোনালি আলোয় ভেসে ওঠা সেই দৃশ্য যেন প্রকৃতি ও ভক্তির এক চিরন্তন সংমিশ্রণ।
আজও সিলফোড় পাহাড়ের মা কালী মন্দির শুধুমাত্র একটি দেবালয় নয়, এটি ঝালদার ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী যেখানে বিপ্লব, ঐতিহ্য ও বিশ্বাস মিলেমিশে তৈরি করেছে এক অনন্য কাহিনী। (Silphor Hill)