ad
ad

Breaking News

Ganga Sagar Bridge

স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায় দেশবাসী, রাজ্যের খরচেই ‘গঙ্গাসাগর সেতু’

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এই সেতু তৈরির কাজ জোর কদমে শুরু করেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর।

Countrymen waiting for dream come true, 'Ganga Sagar Bridge' at state's expense

নিজস্ব চিত্র

Bangla Jago Desk: দেশের আধ্যাত্মিক পর্যটনে খুলে যাবে নয়া দিগন্ত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছেন মুড়িগঙ্গায় সেতু তৈরির কথা। সদ্য গঙ্গাসাগর সফরেও সেই সেতুর কথা বলেছেন। এবার সামনে এল প্রস্তাবিত মুখ্যমন্ত্রীর সেই স্বপ্নের সেতুর ছবি।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এই সেতু তৈরির কাজ জোর কদমে শুরু করেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। এই সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৪ কিমি ৭৫৭ মিটার। অ্যাপ্রোচ রোড বাদ দিয়ে মূল সেতুর দীর্ঘ হবে ৩ কিমি ১৯৮ মিটার। সেতু তৈরিতে প্রস্তাবিত ব্যয় বরাদ্দ করা হবে ১৫০০ কোটি টাকা। টেন্ডার হয়ে গিয়েছে আগের বছরের নভেম্বর মাসের ২৭ তারিখে। সেতু তৈরির সময়সীমা থাকছে চার বছর।

এই সেতু তৈরির জন্য মুড়িগঙ্গার উভয় প্রান্তে মোট ১২.৯৭ একর জমি কেনা হয়েছে সরকারের তরফে। চার লেন বিশিষ্ট এই সেতুতে উভয় প্রান্তে থাকবে ফুটপাথ।
মুড়ি গঙ্গার ওপর একটা সেতু তৈরি করতে পারলে এই অঞ্চল আধ্যাত্মিক পর্যটনে নয়া দিগন্ত খুলে যাবে। এই ভাবনায় বিগত কয়েক বছর ধরে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মুড়ি গঙ্গার ওপর সেতু তৈরির বিষয় নিয়ে দরবার করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন।

এবার গঙ্গাসাগরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একবার কথা হয়েছিল। বলেছিল টাকা দেবে। তার জন্য তিন চার বছর বসে ছিলাম। কিন্তু যখন টাকা দেবে না বুঝে গিয়েছি তখন আমরা নিজেরাই সেতু তৈরি করব।’ ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে টেন্ডার হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘১৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে। তিন চার বছর সময় লাগবে। টাকা আমাদের রাখা আছে।’

যেমন কথা তেমন কাজ। কথা দিয়ে কথা রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। দ্রুত এই সেতু তৈরির উদ্যোগ শুরু গেল রাজ্যের তরফে। মুড়িগঙ্গা নদীর ওপর ব্রিজ তৈরি হোক। ব্রিজ তৈরি হলে সাগরদ্বীপের প্রতিটা মানুষের আর্থিক উন্নতি ঘটবে।

তেমনই প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলার সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এসে এখানে ভিড় জমান। ব্রিজ হলে পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে আর কোনও অসুবিধা থাকবে না। তাঁরা খুব সহজেই গঙ্গাসাগরের পূণ্যভূমিতে এসে পৌঁছে যাবেন। গঙ্গাসাগরবাসীর এটা যেমন কথা, তেমনই পর্যটন বা তীর্থের জন্য যারা গঙ্গাসাগর আসেন তাঁদেরও এটা কথা।
সারা বছরই লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এসে ভিড় জমান গঙ্গাসাগরে। দুর্গম পরিস্থিতিতে নদী পার হয়ে পুণ্যার্থীদের আসতে হয় গঙ্গাসাগরে পুণ্যভূমিতে। কাকদ্বীপের লট নম্বর ৮ থেকে ভেসেল করে পুণ্যার্থীরা আসে গঙ্গাসাগরের কচুবেড়িয়া ঘাটে। কিন্তু নদীতে জোয়ার-ভাটা থাকার কারণে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের।

যার ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাঁদের। এর পাশাপাশি মুড়িগঙ্গা নদীর নাব্যতা অনেকটাই কমে যাচ্ছে। তাই প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলার আগে ভেসেল পরিষেবা সারাদিন সচল রাখার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিং করা হয়।
সাগরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, মুড়িগঙ্গা নদীর ওপরে সেতু হোক৷ যার ফলে তাদেরও জীবনযাত্রার অনেকটাই মানোন্নয়ন হবে।

তবে দীর্ঘদিন ধরে অনেক পরিকল্পনা করা হলেও ফল লাভ হচ্ছিল না কোনও কিছুই। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হতে চলায় উচ্ছ্বসিত সাগরবাসী। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে সাগর আর বহু দূরে থাকবে না। চলে আসবে হাতের মুঠোয়।