চিত্র: নিজস্ব
সুব্রত দত্ত, রানাঘাট: ২০০-র বেশি বারোয়ারি পুজো। রাতভর ঠাকুর দেখা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের ঢল। পুজো মণ্ডপ প্রাঙ্গণে বিচিত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন। উৎসবের আমেজে গমগম করে এলাকা। শুধু বারোয়ারি পুজো নয়, পাড়ায় পাড়ায়, ঘরে ঘরে পুজোর আয়োজন। সোমবার থেকে এই ছবিটাই ধরা দিয়েছে চাকদহ ব্লকের একাধিক গ্রামে। নদিয়ার চাকদহ ব্লকে লক্ষ্মীপুজো হল বছরের শ্রেষ্ঠ উৎসব। টানা ছ’দিন ধরে লক্ষ্মী দশমী পর্যন্ত এই উৎসবকে ঘিরেই যত আয়োজন। নতুন পোশাক, ঘরে ঘরে আত্মীয়-স্বজন। জাঁকজমকে দূর্গাপুজোকেও হার মানায়। নদিয়ার চাকদহ ব্লকের লক্ষ্মী পুজো রাজ্য, দেশ তথা বিদেশেও আলোচিত (Chakdah)।

দরাপপুর, চৌগাছা, নেতাজি বাজার, দেউলি, হিংনাড়া, ভল্লবপুর, হরিআঁখি সহ এই এলাকার গ্রামগুলিতে বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে। কয়েক লক্ষ টাকা বাজেটের পুজো রয়েছে অনেকগুলি। সে সব পুজোয় রয়েছে অভিনব সব ভাবনা। সাবেকি লক্ষ্মীপুজোর পাশাপাশি একাধিক থিমের পুজোর আয়োজন হয়েছে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি হরিশ মিস্ত্রি বলেন, ‘প্রায় ৮০ বছর আগে পূর্ববঙ্গের ঢাকার কিছু মানুষ এই এলাকায় প্রথম বসবাস শুরু করেন। দেশভাগের আগে ঢাকার পূর্বাইল থানার জয়দেবপুর এলাকায় এই বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো ও সেই উপলক্ষে মেলার চল ছিল। এখানে এসেও তারা লক্ষ্মী পুজো শুরু করেন। প্রথমে ঘরে ঘরে পুজো শুরু হয়। পরবর্তীতে বারোয়ারি আকার নেয় (Chakdah)।’
জেলা বা জেলার বাইরে থেকেও দর্শনার্থীরা আসেন নদিয়ার চাকদের লক্ষ্মী পুজো দেখতে। কল্যাণী বা কলকাতায় দুর্গা পুজোকে নিয়ে যখন মাতামাতি, ঠিক সেই সময়ে ৩০০-র বেশি লক্ষ্মী পুজো হয় চাকদের এই সমস্ত এলাকায়। সাধারণত যারা বাইরে থাকেন দুর্গা পুজোয় ঘরে ফেরেন। চাকদহের ছবিটা অন্যরকম। এখানে প্রবাসীরা ঘরে ফেরেন লক্ষ্মী পুজোর সময়। লক্ষ্মী পুজোয় বাংলাদেশের ঢাকা, ত্রিপুরা, রাজ্যের মধ্যে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর-সহ সারা রাজ্যের মানুষ এই ছয়দিন নতুন পোশাক পরে ঠাকুর দেখতে বের হন।
চাকদহ শহর থেকে প্রায় ১২-২০ কিলোমিটারের মধ্যে দরাপপুর, বল্লভপুর, নেতাজি বাজার, চৌগাছা।
এখানকার লক্ষ্মীপুজোর নজরকাড়া থিম টেক্কা দেয় একে অপরকে। এ বছরও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি।পুজোর আয়োজন নিয়ে বারোয়ারী পুজো কমিটিগুলির মধ্যে রীতিমতো টক্কর শুরু হয়েছে। এখানকার লক্ষ্মীপুজো ও মেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা সোমবার থেকেই আসতে শুরু করেছেন। এই সঙ্গে শুরু হয়েছে মেলা। মেলা চলবে প্রায় এক সপ্তাহ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিস (Chakdah)।