নিজস্ব চিত্র
Bangla Jago Desk: অভিষেক দাস, মালদা: গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী দীর্ঘ আট বছর ধরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাদের বহু কাঙ্ক্ষিত সমাবর্তন উৎসবের জন্য। সাধারণত, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের শংসাপত্র (ডিগ্রি) গ্রহণ করেন, যা ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা বা চাকরির ক্ষেত্রে একান্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আট বছর ধরে অনিশ্চয়তার মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
সমাবর্তন না হওয়ায় বহু ছাত্রছাত্রী এখনও পর্যন্ত তাদের শংসাপত্র হাতে পাননি, ফলে তারা উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করতে পারছেন না, কিংবা চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে পারছেন না। এই দীর্ঘ প্রতীক্ষা অনেকের পেশাগত এবং শিক্ষাগত জীবনে বড়সড় প্রভাব ফেলেছে।
সম্প্রতি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এপ্রিল মাসে সমাবর্তন উৎসব আয়োজিত হবে। কিন্তু এপ্রিল মাস পার হয়ে মে মাসেও সেই উৎসবের কোনো খবর নেই। শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস বাস্তবায়িত না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।
ছাত্রছাত্রীরা এখন সেই পুরনো দিনের কথা মনে করছেন, যখন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী শেষবার সমাবর্তনে এসে ছাত্রছাত্রীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে কেটে গেছে দীর্ঘ আটটি বছর। এখন প্রশ্ন উঠছে, বর্তমান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস কবে আসবেন এই উৎসবে যোগ দিতে, এবং কবে ছাত্রছাত্রীরা তাদের বহু প্রতীক্ষিত শংসাপত্র হাতে পাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা সমাবর্তন আয়োজনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং স্ট্যাটিউট মেনে সবরকম পদক্ষেপ নিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কোর্টের জন্য উপাচার্য মনোনীত প্রতিনিধি ও উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি পাওয়ার জন্য আবেদনও করা হয়েছে। তবে যদি প্রতিনিধিরা না আসেন, তবে সমাবর্তন উৎসব আরও পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও চলছে টানাপোড়েন। শাসক দল তৃণমূল এবং বিরোধী দল বিজেপি একে অপরকে দোষারোপ করছে। কিন্তু এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা, যারা শুধুমাত্র তাদের প্রাপ্য শংসাপত্রটি পেতে চায়।