চিত্র- সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নার্সিং পড়ুয়াদের শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে এক বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তের নাম বিট্টু দাস। মঙ্গলবার তাকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
বালুরঘাট হাসপাতালের পুরনো ভবন এবং নতুন দশতলা সুপার স্পেশালিটি ভবনের মাঝে অবস্থিত মহিলা নার্সিং স্কুল ও হোস্টেল। উচ্চ নিরাপত্তার জন্য চারপাশে অন্তত ১০ ফুট উঁচু পাঁচিল থাকলেও, অভিযুক্ত কীভাবে সেই পাঁচিল টপকে ভেতরে ঢুকল, তা নিয়ে শোরগোল পড়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, সোমবার গভীর রাতে বালুরঘাট হাসপাতালের এক বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক বিট্টু দাস মদ্যপ অবস্থায় পাঁচিল টপকে নার্সিং স্কুলের হোস্টেল চত্বরে ঢুকে পড়ে। সে জানালার ফাঁক দিয়ে ঘুমন্ত ছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে, এক ছাত্রী কম্বলের টান অনুভব করতেই চিৎকার করেন, ফলে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে থাকা একটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
পরের দিন, নার্সিং স্কুল কর্তৃপক্ষ বালুরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।
বালুরঘাট থানার আইসি-র নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে তদন্ত চালায়। ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ জানান, “তদন্তে দেখা গেছে, অভিযুক্ত মদ্যপ অবস্থায় পাঁচিল টপকে হোস্টেল এলাকায় ঢোকে এবং নার্সিং ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে। একটি সিসিটিভি ক্যামেরা সে ভেঙে দেয়। আমরা ফুটেজ দেখে তাকে গ্রেপ্তার করেছি। এছাড়া, সন্দেহ করা হচ্ছে যে বাইরে আরও একজন ছিল, তার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, “দুষ্কৃতীরা হোস্টেলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল, তবে সফল হয়নি। পুলিশকে জানানো হয়েছিল, তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
সম্প্রতি রাজ্যের মেডিক্যাল হাসপাতালগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বালুরঘাট হাসপাতালেও সিসিটিভি বসানো হয়েছে, তবে তা সত্ত্বেও কীভাবে অভিযুক্ত পাঁচিল টপকে ঢুকতে পারল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসন জানিয়েছে, হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে এবং প্রতিদিন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে।
এই ঘটনার পর নার্সিং পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করার দাবি তুলেছেন হাসপাতালের কর্মী ও ছাত্রীরা।