চিত্র : সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: জয় চক্রবর্তী: নতুন মৌজা ম্যাপ এক নজরে
এই বাংলাকে কেন্দ্র করে ১৯২৫ সালে তৈরি হয়েছিল মৌজা মানচিত্র। তারপর কেটে গিয়েছে ১০০ বছর। অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যে জায়গায় এক সময় ছিল জলাভূমি, ছিল জঙ্গল সেখানে এখন অট্টালিকা। সেই কারণে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ১০০ বছর পর নতুন করে ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ বামৌজা মানচিত্র তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে ভেক্টর সার্ভে করা হবে।
নিয়ম অনুসারে কোনও মৌজা অঞ্চলে ভৌগোলিকভাবে ৩২ শতাংশের বেশি পরিবর্তন হলে সেখানে নতুন করে সমীক্ষা করতে হবে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ১০০ বছর আগেকার মৌজা মানচিত্রে যা ছিল বর্তমানে অনেক জায়গায় তার অস্তিত্বই নেই। নবান্নের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ‘মৌজা ম্যাপ নতুন করে তৈরি করার যৌক্তিকতা রয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এক সময় যেখানে ছিল কোনও মন্দির অথবা মসজিদ সেখানে বর্তমানে বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। অথবা জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে। খালি পুরনো মানচিত্র কাজে লাগছে না। সেই কারণেই নতুন ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ তৈরি করাটা জরুরি।’
পাশাপাশি হবে ভেক্টর সার্ভে। কিন্তু এই সমীক্ষার অর্থ কী? পশ্চিমবঙ্গের কোনও জায়গায় মশার বংশবৃদ্ধি কেমন ভাবে হচ্ছে এবং ম্যালেরিয়া সহ বিভিন্ন রোগীর প্রাদুর্ভাব কোথায় বেশি এবং কোথায় কম তা বোঝা যাবে এই সমীক্ষার মাধ্যমে। বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ম্যালেরিয়া বা মশা বাহিত রোগের কোপে পড়ে মানুষ।
ভেক্টর সার্ভের মাধ্যমে প্রাদুর্ভাব অঞ্চল চিন্তিত করা হলে সহজেই আগাম পরিকল্পনা নেওয়া যাবে।নবান্নেরএক উচ্চপদস্থ অফিসারেরবক্তব্য,‘মূলত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই ধরনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এবং এটা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত ভাবেই হবে। এতে সরকারের যেমন সুবিধা হবে তেমনই আমজনতার কাছে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।’
তিন ধাপেহবে সমীক্ষা। একদিকে মৌজা ম্যাপ তৈরি অন্যদিকে ভেক্টর সার্ভে। একসঙ্গেই কাজ এগোবে। প্রথম ধাপে সমীক্ষা হবে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমান। এরপর দ্বিতীয় ধাপে সমীক্ষায় আসবে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, দুই চব্বিশ পরগনা এবং পশ্চিম বর্ধমান।
শেষ তথা তৃতীয় ধাপে যে জেলাগুলি সমীক্ষার আওতায় আসবে, তার মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং এবং দুই দিনাজপুর। সঙ্গে থাকছে মালদা এবং মুশিদাবাদ। বর্তমানে এই রাজ্যে মৌজার সংখ্যা ৪২,৩০২। কোনও কোনও মৌজা বেশ খানিকটা বড় হওয়াতে সেখানে একাধিক ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে মৌজা মানচিত্রের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬৮,৪৫৩টি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের একাধিক জনস্বার্থমূলক প্রকল্প রয়েছে। সেই উন্নয়নমূলক প্রকল্পকে আরও বেশি করে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে এই ধরনের মানচিত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। কোনও জায়গায় সম্পূর্ণ জলাভূমি ছিল। এখন সেখানে রীতিমতো শহর হয়ে গিয়েছে। ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ থাকলে কোথায় কীকী আছে তা সরকারের নখদর্পণে থাকবে। ফলে উন্নয়নকে সেখানে পৌঁছে দিতে অনেক সুবিধা হবে। এখন দুয়ারে সরকার চলছে।
৩৭টি প্রকল্পকে নিয়ে ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছেও রাজ্য সরকারি প্রকল্প পৌঁছতে হবে। ক্যাডাস্ট্রাল ম্যাপ এক্ষেত্রে আগামী সময় আরও বেশি সঠিক এবং দিক নির্দেশ করবে। যাতে সেই অঞ্চলে রাজ্য সরকারি উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়া যায়।