চিত্র: সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের কৃষ্ণনগর বাজার এলাকায় ঘটে গেল আরেকটি নারকীয় ঘটনা। কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় এক আইসিডিএস কর্মীকে প্রকাশ্য বাজারে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী যুবক বাপি মাইতির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আক্রান্ত মহিলা কৃষ্ণনগর মধ্যপল্লি সেন্টারে আইসিডিএস কর্মী হিসেবে কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্ত যুবক বাপি মাইতি তাঁকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল। কিন্তু তিনি বারবার তা প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত যুবক গতকাল সন্ধ্যায়, বাড়ি ফেরার পথে তাঁর উপর অ্যাসিড ছুঁড়ে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় ওই মহিলাকে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। বর্তমানে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন। ইতিমধ্যে সাগর থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এই ঘটনা শুধু এক নারীর উপর হামলা নয়, বরং রাজ্যের নারী নিরাপত্তার করুণ পরিস্থিতির আরও একটি দৃষ্টান্ত। একের পর এক যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর এবার প্রকাশ্যে অ্যাসিড হামলা—যা সমাজের চরম অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরছে।
আজ থেকে ছয় মাস আগে আর জি কর মেডিকেল কলেজে এক নার্সের উপর হামলার ঘটনা গোটা রাজ্যকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। পার্ক স্ট্রিট থানার ভেতরেও এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল এক সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি নিউটাউনে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনাও সামনে এসেছে।
অ্যাসিড হামলার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। আনন্দপুর, হুগলি, হাওড়া—প্রতিটি জায়গায় বারবার এমন ঘটনা ঘটেছে। কখনও প্রেম সংক্রান্ত বিবাদ, কখনও পারিবারিক শত্রুতা, আবার কখনও নিছক প্রতিহিংসার কারণে নারীদের উপর এই বর্বর আক্রমণ হচ্ছে।
নারী নির্যাতনের এমন ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি না হলে এই প্রবণতা রোধ করা কঠিন হবে। পাশাপাশি, সমাজকেও নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আরও সক্রিয় হতে হবে। আইনের কড়া প্রয়োগের পাশাপাশি মানুষের মানসিকতা বদলানোও জরুরি।
এই ঘটনার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনার কৃষ্ণনগর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—নারীদের নিরাপত্তা কবে নিশ্চিত হবে?