Bangla Jago Desk : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কাশিপাড়া গ্রামে প্রায় ৯ মাস ধরে একটি শৌচাগারে আটকে রাখা মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে সোমবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃত যুবকের নাম সুজিত দাস বয়স ৩৩ বছর। তিনি পেশায় একজন জেলে ছিলেন। সুজিতের পরিবার জানিয়েছে, প্রায় ৯-১০ বছর আগে তার বিয়ে হয়। এর পর থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি। ২০১৮ সালে ধস্তাধস্তি থেকে তার ছুরিকাঘাতে তার চাচা মতি লাল দাসের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় তার চাচি সুমিত্রা রানী হত্যা মামলা করেন। হত্যার পরপর গ্রেপ্তার হলে পৌনে চার বছর জেলা কারাগারে ছিলেন সুজিত। ২০২২ সালের শেষ দিকে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। মা আরতী রানী ও একমাত্র বড় ভাই অনিল দাস পাঁচ থেকে ছয় মাস বিভিন্ন জায়গায় তার চিকিৎসা করান। কিন্তু কোনোভাবেই সুজিতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না তারা।
স্থানীয় লোকজন জানান, একপর্যায়ে প্রায় ৯ মাস আগে বাড়ির বসতঘরের সামনে একটি শৌচাগার এবং শৌচাগারের পাশে একটি ছোট ঘর নির্মাণ করে সেখানে সুজিতকে আটকে তালাবদ্ধ করে দেয় পরিবার। শৌচাগারের পাশের কক্ষের দরজার নিচের একটি অংশ দিয়ে সুজিতের সঙ্গে পরিবারের লোকজন কথাবার্তা বলতেন এবং তাকে তিন বেলা খাবার দিতেন। সম্প্রতি স্থানীয় লোকজন বিষয়টি নাসিরনগর থানার ওসিকে জানান। এরপর সোমবার বেলা তিনটের দিকে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজসেবার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে কাশিপাড়ায় যান ওসি। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে শৌচাগারের তালা খুলে সুজিতকে বন্দীদশা থেকে বাইরের আলোতে নিয়ে আসেন তারা।
এরপরে তাকে স্নান করে পরিষ্কার করানো হয়। উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা দফতরের সঙ্গে কথা বলে সুজিতকে পরিবারের জিম্মায় রাখে নাসিরনগর থানা-পুলিশ। সুজিতের মা আরতি রানী বলেন, সুজিত মানসিক ভারসাম্যহীন। যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটাতে পারেন। তাই নিরুপায় হয়ে তাকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। এর বিকল্প কোনো উপায় তাদের ছিল না।